Facebook Reels-এর জন্য কপিরাইট-মুক্ত ভিডিও ডাউনলোড করার সেরা উৎসসমূহ সম্পূর্ণ আর্টিকেল পড়ুন Buy Book!
নতুন পোস্ট

নতুন সরকারের প্রতি একজন বাংলাদেশির প্রত্যাশা।

১. ন্যায়বিচার, আইনের শাসন ও সুশাসন

ন্যায়বিচারই একটি সভ্য রাষ্ট্রের ভিত্তি। নতুন সরকারকে বিচারপ্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিক প্রভাব থেকে পুরোপুরি মুক্ত করে দ্রুত, নিরপেক্ষ ও কার্যকরী বিচারকরণ নিশ্চিত করতে হবে। আদালতের কার্যকারিতা বাড়াতে কোর্টের লজিস্টিক, বিচারপতির স্বাধীনতা রক্ষায় আইনগত সংস্কার, এবং মামলার দীর্ঘসূত্রতা হ্রাসে দ্রুত ট্রায়ালের প্রচেষ্টা জরুরি।

২. দুর্নীতি দমন, ঘুষ নিয়ন্ত্রণ ও স্বচ্ছ প্রশাসন

দুর্নীতি একটি জাতিকে ধ্বংস করে। দুর্নীতি দমন কমিশনকে শক্তিশালী করা, সরকারি টেন্ডার ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা, ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে ভোগবার্তা কমানো এবং সরকারি কার্যক্রমে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠা করাই মৌলিক চাহিদা।

৩. ধর্মীয় স্বাধীনতা, ইসলামি মূল্যবোধ ও নিরাপত্তা

ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, মসজিদ–মাদরাসা ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানকে সশ্রদ্ধভাবে নিরাপদ রাখতে হবে। ধর্মবিদ্বেষ, উপনিবেশী অপপ্রচারের বিরুদ্ধে কার্যকর আইনী ব্যবস্থাও জরুরি। একই সঙ্গে ইসলামি মূল্যবোধ সংরক্ষণ ও নৈতিকতার সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য সামাজিক ও শিক্ষাগত উদ্যোগ প্রয়োজন।

৪. ইসলামি শিক্ষা ব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়ন ও একীকরণ

কওমি, আলিয়া ও সাধারণ শিক্ষা—এই তিনটি স্তরের মধ্যে কার্যকর সমন্বয় রাখতে হবে। মাদরাসাকে আধুনিক পাঠ্যক্রম, গণিত, বিজ্ঞান, ভাষা ও প্রযুক্তি শিক্ষা দ্বারা সমৃদ্ধ করা, এবং আলেম ও ইমামদের প্রশিক্ষণে সরকারি সহায়তা প্রদান করা প্রয়োজন।

৫. মসজিদ-মাদরাসার অবকাঠামো ও পরিচালনা

পুরোনো মসজিদ ও মাদরাসার সংস্কার, ইমাম–খতিবদের প্রশিক্ষণ ও সম্মানী বৃদ্ধির ব্যবস্থা, এবং মাদরাসায় পাঠ্যের মান উন্নয়নে সরকারি সহায়তা জরুরি।

৬. যুব সমাজের জন্য হালাল কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ

যুবসমাজে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য সুদবিহীন ঋণ, স্টার্টআপ ফান্ড, এবং প্রতিটি জেলায় দক্ষতা উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। তরুণদের মধ্যে উদ্যোক্তা মানসিকতা গড়ে তোলা এবং অনলাইন/ফ্রিল্যান্সিংয়ে সহজতর পদ্ধতি নিশ্চিত করাই লক্ষ্য হওয়া উচিত।

৭. ইসলামী অর্থনীতি, ব্যাংকিং ও হালাল বিনিয়োগ

ইসলামী ব্যাংকিং সিস্টেমকে আধুনিক ও স্বচ্ছ করে তোলা, ওয়াক্ফ সম্পদের দক্ষ ব্যবস্থাপনা, এবং সাধারণ মানুষের জন্য সুদমুক্ত ক্ষুদ্রঋণ সুবিধা সম্প্রসারণ নতুন সরকারের অন্যতম কাজ হওয়া উচিত।

৮. সামাজিক নিরাপত্তা ও দরিদ্রতা বিমোচন

বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা ও দরিদ্রদের জন্য খাদ্য–বাসস্থান সুরক্ষা—এসব ক্ষেত্রে সরকারি ব্যয় নিশ্চিত করা আবশ্যক। কমিউনিটি-ভিত্তিক প্রকল্প ও চাকরির সুযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে অভাব নিরসন করা সম্ভব।

৯. সরকারি সেবা—জনবান্ধবতা ও হয়রানি রোধ

অনলাইনে অধিকাংশ সরকারি সেবা প্রদান করে, দালাল–দূত–দূর্নীতির সুযোগ সীমিত করে, এবং সেবা প্রদানে নির্দিষ্ট সময়সীমা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করাই দরকার।

১০. নৈতিকতা, পরিবার ও সামাজিক মূল্যবোধ

পারিবারিক বন্ধন রক্ষা, নৈতিক শিক্ষা গ্রহণযোগ্য করা, এবং অনৈতিকতা—যেমন পর্নোগ্রাফি, মাদক—প্রতিহত করা গুরুত্বপূর্ণ। পরিবারকে সহায়তা করে সমাজের নৈতিক ভিত্তি শক্ত করা যায়।

১১. আইন-শৃঙ্খলা, অপরাধ প্রতিরোধ ও নিরাপদ সমাজ

মাদক সমূলে উৎখাত, নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে কার্যকর আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ, এবং ট্রাফিক ও সড়ক নিরাপত্তা উন্নয়ন—এসবের মাধ্যমে নিরাপদ সমাজ গঠন করা সম্ভব।

১২. সন্ত্রাস, উগ্রবাদ ও ধর্মীয় বিদ্বেষ প্রতিরোধ

সন্ত্রাস মোকাবিলায় কেবল আইনগত ব্যবস্থা নয়—সামাজিক, শিক্ষামূলক ও ধর্মীয় সচেতনতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। মিথ্যা অভিযোগে নিরীহকে হয়রানি করা থেকে বিরত থেকে ন্যায্য তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে হবে।

১৩. স্বাস্থ্যসেবা ও খাদ্য নিরাপত্তা

ভেজাল খাদ্য ও নকল ওষুধ প্রতিরোধ, গ্রামীণ হাসপাতাল ও ক্লিনিক উন্নয়ন, এবং জরুরি স্বাস্থ্যসেবার সহজলভ্যতা—এসব সরকারের অগ্রাধিকার হওয়া দরকার।

১৪. আধুনিক শিক্ষা, গবেষণা ও শিক্ষক উন্নয়ন

শিক্ষাব্যবস্থায় পাঠ্যক্রম সংস্কার, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও স্কুল–কলেজে প্রযুক্তি ল্যাব স্থাপন করে মানোন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। গবেষণায় বিনিয়োগ দেশে দীর্ঘমেয়াদী সমৃদ্ধি আনবে।

১৫. ডিজিটাল বাংলাদেশ, আইটি ও উদ্ভাবন

ফ্রিল্যান্সিং ও অনলাইন কাজের ধারাকে সহজতর করার জন্য ব্যাংকিং ও পে-গেটওয়ে সংস্কার, সাইবার নিরাপত্তা উন্নয়ন এবং ডিজিটাল দক্ষতা প্রশিক্ষণ প্রয়োজন।

১৬. মুসলিম বিশ্ব ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক

ওআইসি ও অন্যান্য মুসলিম রাষ্ট্রের সাথে অর্থনৈতিক-সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদার করে, এবং প্রবাসী শ্রমিকদের অধিকার সুরক্ষায় কূটনৈতিক উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।

১৭. সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ধর্মীয় সহনশীলতা

ধর্মীয় বর্ণনায় উত্তেজনা কমিয়ে, সকল ধর্মের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করতে হবে।

১৮. পরিবেশ, জলবায়ু ঝুঁকি ও কৃষি উন্নয়ন

নদী রক্ষা, উপকূলীয় করিডরকে সুরক্ষিত করা, কৃষকের ন্যায্য মূল্য ও প্রযুক্তিগত সহায়তা প্রদান—এসব গতানুগতিক পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করে দেশের পরিবেশগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাবে।

১৯. অবকাঠামো, পরিবহন ও যোগাযোগ

জরুরী যোগাযোগ-নেটওয়ার্ক, সড়ক ও রেল উন্নয়ন, শহুরে পরিবহন আধুনিকায়ন—এসব উন্নয়নের মাধ্যমে অর্থনৈতিক গতিশীলতা বাড়ে।

২০. নাগরিক অধিকার, স্বাধীনতা ও মানবিক মর্যাদা

মত প্রকাশের স্বাধীনতা, তথ্য অধিকার, অযথা হয়রানি-গ্রেপ্তার রোধ এবং সমাজের সংবেদনশীল শ্রেণীর (নারী, শিশু, প্রবীণ, প্রতিবন্ধী) জন্য সুরক্ষা—এসব নীতিতে দেশকে এগোতে হবে।

নোট: প্রত্যাশাগুলো স্মরণীয়, বাস্তবসম্মত এবং ন্যায়ভিত্তিক হওয়া উচিত। সরকারকে এগুলো বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিতে হলে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, স্বচ্ছ বাজেট এবং নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি।

উপসংহার

একজন ধর্মপ্রাণ নাগরিকের প্রত্যাশা কেবল ধর্মীয় নয়—এটি ন্যায়, মানবতা, সেবা ও উন্নতির একটি সমন্বিত চিত্র। নতুন সরকার যদি এসব দিকে মনোনিবেশ করে, তবে দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং শান্তি নিশ্চিত করা সম্ভব।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Cookie Consent
আমাদের সাইটকে আরো উন্নত করতে প্রয়োজনে আপনার ব্রাউজার ডাটা ব্যবহার করি । কিন্তু আমরা আপনার ইমেইল ও পাসওয়ার্ড সংগ্রহ করি না । আপনার ব্যক্তিগত ডাটা আমাদের কাছে সম্পূর্ন নিরাপদ । আমাদের সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে
Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.
AdBlock Detected!
We have detected that you are using adblocking plugin in your browser.
The revenue we earn by the advertisements is used to manage this website, we request you to whitelist our website in your adblocking plugin.
Site is Blocked
Sorry! This site is not available in your country.
আক্তারুজ্জামান মোল্লা আসসালামু আলাইকুম
আমার ব্লগে স্বাগতম
Type here...
-->